টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রীকে ধর্ষণ মীমাংসার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
টাইমস বিডিঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে ধর্ষণের বিষয়টি স্থানীয় মাতাব্বররা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মীমাংসার কথাও জানা গেছে। তবে মিমাংসার পুরো টাকা ওই ছাত্রীর পরিবারকে দেয়া হয়নি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওই ছাত্রী উপজেলার এলেঙ্গাতে অবস্থিত একটি মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণীতে লেখাপড়া করে। তার বাবা এখানেই বাসা ভাড়া করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে এবং তারা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বাসিন্দা।
ধর্ষক আনোয়ার হোসেন এলেঙ্গা হাই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র ও নেত্রকোনা জেলার মদনপুর ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামের মাহবুব আলমের ছেলে। তারা দীর্ঘদিন যাবত উপজেলার এলেঙ্গা পৌর এলাকার সেমকো সিএনজি পাম্পের পূর্ব পার্শের বাসা ভাড়া নিয়ে এলেঙ্গাতে হোটেল ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ছাত্রীটির বাবা বলেন, আমি এলেঙ্গাতে বাসা ভাড়া নিয়ে একটি সেলুন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। বখাটে আনোয়ারের পরিবার আমাদের পার্শ্ববর্তী বাসায় ভাড়া থাকে। গত ১২ এপ্রিল (শুক্রবার) সকালে আমার মেয়েকে আনোয়ার তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় আমার মেয়ে চিৎকার করলে আমার স্ত্রী ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলে ধর্ষক পালিয়ে যায়।
আমি থানায় মামলা করতে যাবো শুনে ধর্ষকের বাবা ও বড় ভাই স্থানীয় মাতাব্বরদের বিষয়টি জানান। পরে তারা আমাকে মিমাংসায় বসতে বাধ্য করে। শালিসে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে আমাকে ২০ হাজার টাকা দিলে আমি নিতে না চাইলে আমার স্ত্রীর কাছে টাকাগুলো দিয়ে যায়।
বাকি ২০ হাজার টাকা মাতাব্বররা নিয়ে নেয়।
আমাকে বারবার শালিসের কাগজে স্বাক্ষর দিতে বললেও আমি কোন স্বাক্ষর করিনি।
মশাজান গ্রামের স্থানীয় মাতাব্বর আব্দুল জলিল মিমাংসার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ছেলে-মেয়ে নাবালক হওয়ায় জালাল হাজী, নবাব আলী, দেলোয়ার হোসেন, মোহনসহ ১০-১২জন মিলে ৫০হাজার টাকা জরিমানা করি। এ সময় ছেলে পক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিতে পারবেনা জানালে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তবে মেয়ের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মেয়ের পরিবারকে ৪০ হাজার টাকাই দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত ধর্ষক আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমার বাবা ও বড় ভাই মাতব্বরদের নিয়ে মিমাংসা করে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি আর কিছু জানিনা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আনোয়ারের বাবা মাহবুব হোসেন বলেন, ছোট একটি বিষয় নিয়ে স্থানীয় মাতাব্বররা আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা নিয়ে মিমাংসা করে দিয়েছে।
এলেঙ্গা পৌর সভার মেয়র নুর-এ-আলম জানান,বিষয়টি আমার জানা নেই। এবিষয়ে কেউ আমার কাছে কোন অভিযোগ করেনি।যদি কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে আসে বিষয়টি আমি দেখবো।
কালিহাতী থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই। যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থ গ্রহন করা হবে।
মো: আ: হামিদ
টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি।