আর্তনাদ
ইশা দাস্তগীর
“ও আল্লাহ গো! আমার পুত রে লইয়া গেলো রে!”
রুম্মানের মায়ের এমন আর্তনাদ প্রভাব ফেলেছে আশেপাশের সকল মানুষের উপর। সবাই চোখের জ্বল মুছতে মুছতে নানা কথা বলছে।
রুম্মান এর নিথর দেহ ঝুলছে ফ্যানের সাথে। পুলিশ এসে নামাবে। তাই কেউ নামানোর সাহস করছেনা।
রুম্মানের বোন সাথী ভাইয়ের পা ধরে চোখের জ্বল ফেলছে অনড়গল। পাশের বাড়ির মহিলা খোটা দিয়ে বলছে” মাইয়াটা তো ভালা চরিত্রের না,বেডাগো লগে শুনছি হুইয়া থাহে।এই বেশরম মাইয়ার লাইগা তোমার পোলার আজ এই হাল” ।
পুলিশ এসে বিকালের মধ্যে সব কাজ শেষ করে লাশ বক্সে করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। রুম্মানের বাবা নাই। মায়ের মুখে শুনেছে তার জন্মের ২ বছর পর নাকি কই হারাইয়া গেছে। আর পাওয়া যায় নাই।
তিনি ২ টি সন্তানকে অনেক কষ্ট করে বাড়ি বাড়ি কাজ করে খেয়ে না খেয়ে লালন পালন করেছেন। আর আজ! কলিজার এক টুকরা বক্সে শুয়ে আছে। বাড়ি ভর্তি মানুষ। সবাই নানা সমালোচনায় লিপ্ত।
যার জন্য প্রাণ দিলো সেই মেয়ে তার স্বামীর সাথে দেশের বাইরে চলে গেছে। সেটা শুনেই ঝুলে পড়ে সে শীতের সকালে বন্ধ ফ্যানে। মেয়েটি যে বিয়ে করেছে সেটা সে জানে নি৷ যখন জানতে পারলো তখন আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলো না।
কারন ৩ বছরের সম্পর্কে কত আবেগ, কত মায়া, কত ত্যাগ জমে ছিলো। আর আজ, সব শেষ। শুধু রয়ে গেছে কিছু মানুষের কান্না আর কবরের সেই অন্ধকার৷
মেয়েটার জীবন আশার আলো জ্বালাতে গিয়ে নিজে অন্ধকার ঘরে পরে রইবে। এটাই হলো কিছু ভালোবাসার পরিনতি।
রুম্মানের মতো কত ছেলে রয়েছে যারা আজও সেই ভালোবাসার মানুষের দিকে তাকিয়ে বাচার স্বপ্ন দেখছে৷ কত পরিকল্পনা করছে।
টাইমস বিডি ২৪